মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক তথ্যসমূহসম্মানিত পাঠকগণ আসসালামু-আলাইকুম। আজ আমরা জানবো, মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ
সম্পর্কে। মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ সম্পর্কে জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি
ভালোভাবে পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র: মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ।
- ভূমিকা
- মৌসুম এবং মৌসুমী ফলের প্রকার
- প্রক্রিয়াজাতকরণ কি এবং কেন?
- প্রক্রিয়াজাতকরণের ধাপ সমূহ
- প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ধরন
- ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি
- পুষ্টিগুণ এবং মান নিয়ন্ত্রণ
- বাজার সম্ভাবনা এবং চাহিদা
- প্রক্রিয়াজাতকরণে চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা
- লেখকের শেষ কথা
ভূমিকা
সাধারণত মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ বলতে ফলমূল সংগ্রহের পর সেগুলোকে
সংরক্ষণযোগ্য এবং মূল্য সংযোজিত পণ্যে রূপান্তর করার একটি প্রক্রিয়া বা মাধ্যম
কে বোঝায়। বর্তমানে প্রায় সব দেশেই মৌসুমী ফল প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হলেও
পর্যাপ্ত সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যায়।
এক্ষেত্রে উক্ত ফল গুলোকে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সেগুলো থেকে জ্যাম, জেলি,
আচার, জুস, মোরব্বা, ইত্যাদি তৈরি করে ব্যবহারযোগ্যতা এবং এর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি
করা যায়। সর্বোপরি প্রক্রিয়াজাতকরণ কৃষকের ন্যায্য মূল্য নিশ্চ নিশ্চিত করে
থাকে অনেকটা।
মৌসুম এবং মৌসুমী ফলের প্রকার
মৌসুম (Seasons) এবং মৌসুমী ফল (Seasons fruits) উল্লিখিত বিষয়টি প্রকৃতির
সাথে খুবই গভীরভাবে যুক্ত। নিচে মৌসুম এবং প্রতিটি মৌসুমে পাওয়া মৌসুমী ফলের
প্রকার ভেদ তুলে ধরা হলো:
মৌসুম:
- গ্রীষ্মকাল-সাধারণত এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময়
- বর্ষাকাল-জুন থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত
- শরৎকাল-আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত
- হেমন্তকাল-সাধারণত অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত
- শীতকাল-এক্ষেত্রে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত
- বসন্তকাল-ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত।
মৌসুমী ফলে প্রকারভেদ ঋতু ভেদে:
১. গ্রীষ্মকালে পাওয়া যায় এমন মৌসুমী ফলগুলো:
- আম, কাঁঠাল, লিচু, তরমুজ, বাঙ্গি, জাম, আনারস, ইত্যাদি প্রভৃতি বিশেষ গ্রীষ্মকালীন মৌসুমী ফল।
২. বর্ষাকাল:
- শেষের দিকে আম এবং কাঁঠাল এছাড়াও কলা, আনারস, পেঁপে, পেয়ারা, ইত্যাদি বর্ষাকালীন মৌসুমী ফল।
৩ শরৎকাল:
- পেয়ারা, ডালিম, চালতা, কদবেল, ইত্যাদি শরৎকালীন মৌসুমী ফল।
৪. হেমন্তকাল:
- যথাক্রমে নারীকেল, খেজুর, বড়ই ইত্যাদি।
৫. শীতকাল:
- সাধারণত কমলা, মালটা, আমলা, খেজুর, সফেদা, বেদানা, স্ট্রবেরি, ইত্যাদি ফলগুলো শীতকালীন মৌসুমী ফল।
৬. বসন্তকাল:
- যথাক্রমে বেল, লটকন, পেপে, কলা, জামরুল ইত্যাদি বসন্তকালীন মৌসুমী ফল।
প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন মৌসুম ভিত্তিক মৌসুমী ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক
উপকারী কারণ ওই সময় প্রয়োজনের পুষ্টি পাওয়া যায়।
প্রক্রিয়াজাতকরণ কি এবং কেন?
Processing অর্থাৎ প্রক্রিয়াজাতকরণ বলতে সাধারণত কাঁচামাল বা এটা বাজে
কোন কাঁচা উপাদানকে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম বা ধাপে রূপান্তর করার এবং
ব্যবহারযোগ্য করার একটি মাধ্যম বা প্রক্রিয়া। নিচে বিস্তারিত বলা হলো :
প্রক্রিয়াজাতকরণ কি?
প্রক্রিয়াজাতকরণ হলো মূলত এমন একটি মাধ্যম যা একটি কাঁচামালকে কার্যক্রম
উপাদান বা ব্যবহারযোগ্য রূপে পরিবর্তন করার একটি মাধ্যম।
উদাহরণ:
- খাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ: খাবার প্রক্রিয়া চাককরণের মধ্যে ধরা যায় যেমন চাল ধোয়া এরপর পর্যায়ক্রমে রান্না করা তারপর হতে পারে প্যাকেটজাত করা ইত্যাদি এমন কিছু।
- তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ: যেকোনো ধরনের কাঁচা মূলত তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ এবং সংরক্ষণ বা উপস্থাপন করা হয় এমন তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ।
কেন প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়?
- ব্যবহার যোগ্যতা বাড়ানো: অনেক সময় আমরা দেখি যে কাঁচা পণ্য ব্যবহারযোগ্য হয়ে ওঠেনা। এজন্য পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ করে ব্যবহারযোগ্য করা যায় খুব সহজেই।
- সংরক্ষণ সহজ করা: যেকোনো পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ করার ফলে অনেকদিন পর্যন্ত খুব ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায়।
- মূল্য সংযোজন: প্রক্রিয়াজাতকরণ মূলত যে কোন পণ্যের কার্যকরীতা এবং গুণগত মান বৃদ্ধি করে থাকে। যা পরবর্তীতে বাজারে বেশি দামে বিক্রয় করা যায়।
- দ্রুত এবং সহজ পরিবহন: আমরা দেখে থাকি প্রক্রিয়াজাত পণ্য অনেক সময় খুব সহজে পরিবহন এবং প্যাকেট জাত হয়ে থাকে।
- স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত: মূলত খাদ্য প্রক্রিয়া চাঁদকরণের মাধ্যমে জীবাণু দূর হয়।
প্রক্রিয়াজাতকরণের ধাপ সমূহ
বর্তমান সময়ে সাধারণত মৌসুম ভেবে ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণের ধাপসমূহ নিচে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো:
মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণের উল্লেখিত ধাপসমূহ:
- ফল সংগ্রহ: মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণে প্রাথমিক ধাপ হচ্ছে যথাযথ এবং ভালো মানের ফল সংগ্রহ করা যাতে মানসম্মত কাঁচামাল খুব সহজেই পাওয়া যায় বা রূপান্তরিত হয়।
- বাছাই এবং পরিষ্কার: এরপর পর্যায়ক্রমে ভালো এবং খারাপ ফলগুলো বাছাই করণের মাধ্যমে রাসায়নিক দ্রব্যসমূহ যথাক্রমে পরিষ্কার করা।
- খোসা এবং বিচি সরানো: অবশ্যই প্রয়োজন অনুযায়ী ফলের খোসা ছাড়ানো এবং বা অনুপযোগী অংশসমূহ বাদ দিয়ে দেওয়া।
- কাটা এবং টুকরো করা: প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য ফলকে প্রয়োজন মাফিক কাটা বা টুকরো করে বিভিন্ন আকার আকৃতিতে রূপান্তর বা সাইজ করা।
- তাপ: অনেক সময় দেখা যায় কিছু ফল হালকা গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয় মূলত এর কারণ হলো এনজাইম ধ্বংস করা এবং রং ও গন্ধ ধরে রাখার জন্য।
- প্রসেসিং অথবা রান্নাবান্না: প্রক্রিয়াজাত এমন কিছু নির্দিষ্ট পণ্য আছে যা রান্না করা হয় যেমন জ্যাম, জেলি, জুস, চাটনি, মোরব্বা প্রভৃতি।
- সংরক্ষণ উপকরণ : ফল সংরক্ষণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপকরণ মেশানো হতে পারে যেমন এক্ষেত্রে চিনি লবণ ভিনেগার প্রভৃতি এতে ফলের স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায় অনেকাংশে।
- প্যাকেজিং: প্রক্রিয়াজাতকরণ ফলকে সাধারণত পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত ভাবে কৌটায় সংরক্ষণ বা প্যাকেজিং করা হয়।
- লেবেলিং: রোকিয়াজাতকরণ পর্ব শেষে অবশ্যই বোতলের গায়ে প্রোডাক্টের নাম তারিখ এবং মেয়াদ লেখা হয়।
- সংরক্ষণ: প্রক্রিয়াজাতকরণ সব পণ্যগুলো সাধারণত ঠান্ডা এবং শুষ্ক জায়গায় সংরক্ষণ করা যায়।
ওপরে উল্লেখিত প্রত্যেকটি ধাপ নিয়মমাফিক অনুসরণ করলে মৌসুমী ফলগুলো দীর্ঘদিন
ধরে সংরক্ষণ করা যায় এবং বাজারজাতকরণ করা যায়।
প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ধরন
বর্তমান সময়ে মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাত পণ্যের ধরন বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে
সাধারণত। মৌসুমী ফল সাধারণত মৌসুম পর্যায়ে ব্যবহারযোগ্য এবং সংরক্ষণের জন্য
প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়। মৌসুমী ফল থেকে তৈরি করা কয়েকটি প্রক্রিয়াজাত
পণ্যের ধরন নিচে আলোচনা করা হলো:
১. ফলের জ্যাম এবং জেলি:
- মৌসুম ভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের ফল যথা আম, কলা, পেঁপে, স্ট্রবেরি, ইত্যাদি দিয়ে জ্যাম এবং জেলি তৈরি করা হয়।
- উক্ত জ্যাম এবং জেলি সংরক্ষণ করার জন্য চিনি এবং পেক্তিন ব্যবহার হয়।
২. ফলের জুস এবং সিরাপ:
- মৌসুম ভিত্তি ফল যেমন আম, লিচু, মালটা, কমলা, আনারস, ইত্যাদি দিয়ে ফলের জুস এবং সিরাপ তৈরি করা হয়।
- এগুলো আবার বাণিজ্যিকভাবে বোতলজাত করার মাধ্যমে বিক্রয় করা হয়।
৩. চাটনি এবং আচার:
- মৌসুম ভিত্তিক অনেক ধরনের ফল আছে যেগুলো দিয়ে চাটনি এবং আচার তৈরি করা হয় যেমন আম, জলপাই, তেতুল, বড়ই ইত্যাদি প্রভৃতি।
৪. ফল শুকনা:
- কিছু কিছু মৌসুমী ফল আছে যা শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায় যেমন পেঁপে, কাঁঠাল, আম,কলা, ইত্যাদ।
- মূলত উক্ত ফলগুলো স্নাক্স হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।
৫. ফলের ক্যানিং:
- মৌসুম ভিত্তিক ফল গুলোকে বিভিন্নভাবে সংরক্ষণ করা যায় যেমন ক্যানিং বা টিনের সংরক্ষণের মাধ্যমে।
- উল্লেখযোগ্য হলো আনারস বা লিচু।
৬. ফলের আইসক্রিম অথবা শরবত:
- বিভিন্ন ধরনের মৌসুমিক ফল আছে যেগুলো দিয়ে আইসক্রিম বা ঠান্ডা পানীয় তৈরি করা যায় যথা আম, লিচু, জাম ইত্যাদি।
ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি
বর্তমান সময়ে মৌসুমী ফল প্রক্রিয়া চাঁদকরণে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি
ফলের প্রকারভেদ প্রক্রিয়াজাতকরণের ধরন এবং উৎপাদনের পরিমাণ অনুযায়ী বিভিন্ন
রকমের হতে পারে বা হয়ে থাকে। নিচে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হলো:
মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ:
১.Washer Drum: মূলত ফলমূলকে ধোয়া এবং কীটনাশক দূর করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
২.Peeler: মূলত ফলমূলের খোসা ছাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয় এবং ম্যানুয়াল ও
অটোমেটিক দুই ভাবেই হতে পারে।
৩.Pulper: ফলের গোড়া এবং তাল তৈরিতে সাধারণত ব্যবহৃত হয়।
৪.Juice Extractor: মূলত রস বের করার জন্য ব্যবহৃত হয় যেমন লিচু, জাম, কমলা,
ইত্যাদি প্রভৃতি ফল।
৫.Boiler Stream: ফলকে মূলত তাপ দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৬.Evaporator: ফল থেকে সাধারণত ঘন ভাবে জুস বের করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
৭.Filling Machine: সাধারণত জুস গুলোকে বোতল বা ক্যানিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৮.Sealing: বোতল বা ক্যান সিল করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
৯.Labeling Machine: এক্ষেত্রে পণ্যের গায়ে লেবেল লাগানোর জন্য প্রযোজ্য।
ব্যবহৃত প্রযুক্তি:
১.Pasteurization: জীবাণু ধ্বংস করা এবং হালকা চাপ দিয়ে রস পাল্পকে পাস্তুরাইজ
করা মূলত।
২.Hot-fill technology: জুস বোতল জাত পণ্য গরম অবস্থায় বোতলে ভরে সিল করে
সংরক্ষণ বাড়ানো।
৩.Vacuum Packing: মূলত ব্যবহৃত হয় অক্সিজেন অবস্থায় প্যাকিং করে পণ্যের
মেয়াদ বা আয়ুষ্কাল বাড়ানোর জন্য।
৪.Cold chain technology: মূলত ঠান্ডা পরিবেশে সংরক্ষণ এবং পণ্যের গুণগতমান
সঠিক রাখা।
৫.Freez Drying: মূলত ফল শুকানোর জন্য উন্নত পদ্ধতি এবং ফলের মধ্যে থাকা পানি
বরফে পরিণত করা এবং সাবলিমেশন প্রক্রিয়ায় তা খুব সহজেই সরিয়ে নেওয়া।
পুষ্টিগুণ এবং মান নিয়ন্ত্রণ
মৌসুমী ফলের ক্ষেত্রে পুষ্টি গুনাগুন এবং মান নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ
একটি প্রক্রিয়াজাতকরণ। নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:
মৌসুমী ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণ:
মৌসুম ভিত্তিক ফল যেমন আম কাঁঠাল লিচু জাম কমলা পেয়ারা একটি নির্দিষ্ট সময়
পাওয়া যায়। উল্লেখিত উক্ত ফলগুলো প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সারাবছর সংরক্ষণ
এবং ব্যবহারযোগ্য সম্ভব যেমন:
- ফলের জ্যাম জেলি জুস সিরাপ ইত্যাদি তৈরীর মাধ্যমে।
- ফল ভালোভাবে শুকনা করে সংরক্ষণ করে।
- বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায় যার আচার এবং মোরব্বা তৈরি করে সংরক্ষণ করা যায়।
পুষ্টি গুনাগুন:
মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাত কর্মের সময় সাধারণত কিছু পুষ্টি গুনাগুনে পরিবর্তন
লক্ষ্য করা যায়। এজন্য দরকার সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণ।
পুষ্টি উপাদান সমূহ:
- ভিটামিন সি: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলগুলো তাজা ফলে সাধারণত বেশি, থাকে এবং তাপে সংবেদনশীল হয় এজন্য প্রসেসিংয়ের সময় কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়।
- ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন: মৌসুম ভিত্তিক কিছু ফলে এটি উচ্চমাত্রায় পাওয়া যায় যেমন আম।
- ফাইবার: ফল প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে ফাইবারের পরিমাণ অনেকাংশে কমে যায়।
- প্রাকৃতিক চিনি যুক্ত: উল্লেখিত প্রক্রিয়াটির সহজেই হজমযোগ্য।
পুষ্টি গুনাগুন বজায় রাখতে করণীয় সমূহ:
- অবশ্যই প্রক্রিয়াজাতকরণের সময় কম তাপমাত্রা এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রক্রিয়াজাতকরণ।
- চেষ্টা করুন ফ্রিজ ড্রইং ব্যবহার করার।
- অবশ্যই এন্টি অক্সিডেন্ট ব্যবহার করুন যাতে রং এবং পুষ্টি গুনাগুন বজায় থাকে।
মান নিয়ন্ত্রণ:
- কাঁচামালের গুনাগুন পরীক্ষা: অবশ্যই এক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় তাজা পাকা এবং কীটমুক্ত ফল বাছাই করা আবশ্যক।
- পরিষ্কার এবং জীবাণুমু মুক্তকরণ: পানি অথবা ক্লোরিন দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা।
- প্রক্রিয়াকরণ ধাপের মান নিয়ন্ত্রণ: অবশ্যই প্রক্রিয়াজাতকরণে র নির্ধারিত তাপমাত্রা এবং সময় ঠিক রাখা।
- রোগ জীবাণু পরীক্ষা: অবশ্যই ফল ল্যাপ টেস্টের মাধ্যমে রোগ জীবাণু এবং ছত্রাক আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
- সংরক্ষণ এবং মোরগজাতকরণ: অবশ্যই এল আরজেন এবং রাসায়নিকের পরিমাণ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা। আবার ফুড গ্রেট মোরগ ব্যবহার নিশ্চিত করার।
বাজার সম্ভাবনা এবং চাহিদা
বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাত বা দেশের কৃষি শিল্প এবং রপ্তানি খাতে মৌসুমী ফল
প্রক্রিয়াজাতকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। বিস্তারিত বলা হলো:
মৌসুমী ফলের বাজার সম্ভাবনা:
- ফল উৎপাদনে উর্ধ্বগতি: বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে ফল উৎপাদন প্রায় ১১% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে যা প্রক্রিয়াজাত শিল্পের কাঁচামাল সংগ্রহে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- অপ্রতুল প্রক্রিয়াজাত সুবিধা: বর্তমান সময়ে দেশে যে পরিমাণ ফল উৎপাদন হয় তার বড় একটি অংশ মৌসুম শেষে নষ্ট হয়ে পড়ছে কারণ পর্যাপ্ত প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণের অভাবে।
- বাজার চাহিদা এবং রপ্তানি: আমাদের দেশীয় বাজারে বর্তমান সময়ে প্রক্রিয়াজাতকরণ ফলের চাহিদা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও এর রপ্তানি অনেক অংশে বাড়ছে যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক।
চাহিদা এবং ভোক্তা প্রবণতা:
- দেশীয় চাহিদা: বর্তমান সময়ে মোট ফলের চাহিদায় প্রায় ৬৪% দেশীয় উৎপাদন হতে আছে। বাকি ৩৬ পার্সেন্ট হয় আমদানির মাধ্যমে।
- ভোক্তার পছন্দ: বক্তারা সবসময়ই তাজা এবং পুষ্টি গুনাগুন সমৃদ্ধ ফল পছন্দ করে থাকে যা স্থানীয়ভাবে ফলের প্রক্রিয়াজাতকরণে পণ্যের চাহিদা অনেকাংশে বাড়িয়েছে।
প্রক্রিয়াজাতকরণে চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা
বর্তমান সময়ে মৌসুমী ফল প্রক্রিয়াজাতকরণে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং সমস্যা দেখা
দেয়। নিচে প্রধান প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো আলোচনা করা হলো:
1. কাঁচামাল সংরক্ষণ অভাব:
- সীমিত কোল্ড স্টোরেজ: বর্তমান সময়ে ফল সংরক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ কোল্ড স্টোরেজ নেই, যার ফলে মৌসুম শেষে অধিকাংশ ফল নষ্ট হচ্ছে কিংবা পচে যাচ্ছে।
- অবকাঠামো সমস্যা: বিশেষ করে প্রক্রিয়াজাতকরণে গ্রামীন এলাকায় উপযোগী অবকাঠামো পাওয়া যায় না।
2. আধুনিক প্রযুক্তির অভাব:
- যন্ত্রপাতির ঘাটতি: ফল প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বর্তমান সময়ে প্রায় অনিশ্চিত। এজন্য প্রাথমিকভাবে পুরনো প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়
- গবেষণা এবং উদ্ভাবন: নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে গবেষণা অথবা উদ্ভাবনের কার্যক্রম ও পর্যাপ্ততা এবং অযথেষ্টতা।
3. দক্ষ মানবসম্পদ অভাব:
- প্রশিক্ষণের অভাব: রুকিয়া চ্যাটকরণের জন্য পর্যাপ্ত দ্রক্ষ শ্রমিক এবং টেকনিশিয়ানের সংখ্যা বর্তমান সময়ে খুবই কম দেখা যায়।
- কৃষকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ না থাকা: বর্তমান সময়ে ফল চাষ এবং সংগ্রহের জন্য সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ না করায় প্রক্রিয়াজাতকরণে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
4. বিনিয়োগ সমস্যা:
- মূলধনের অভাব: বর্তমান বাংলাদেশের প্রক্রিয়াজাতকরণে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোগ তারা পর্যাপ্ত ঋণ এবং বিনিয়োগ সুবিধা পাচ্ছেন না।
- ঋণের জটিলতা: বর্তমান সময়ে ব্যাংক ঋণের প্রক্রিয়া জটিল এবং খুবই সময়সাপেক্ষ।
5. বাজারজাত করন এবং সরবরাহ দুর্বলতা:
- দক্ষ বিপণন কৌশল এর অভাব: রোকিয়াজাত পরবর্তী বাজারজাত করতে উদ্যোগ তারা যথাযথ কৌশল এবং সিস্টেম সাধারণত প্রয়োগ বা জানেন না।
- পরিবহন সমস্যা: প্রক্রিয়াজাত ফলগুলো পরিবহনের সময় যথাযথ অব্যবস্থাপনা এবং দেরি হওয়ার কারণে পুষ্টি গুনাগুন অনেকাংশে নষ্ট হয়।
6. মান নিয়ন্ত্রণ এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত:
- পর্যাপ্ত পরীক্ষাগার অভাব: সঠিক সময়ে প্রক্রিয়া চাঁদ ফলগুলো পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সঠিক পরীক্ষাগার নেই।
- বিশ্ব বাজারের মান পূরণে ব্যর্থ: এক্ষেত্রে উদ্যোক্তা রা বিশ্ববাজারে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে এক্সপোর্ট কোয়ালিটি তথা পণ্য মান সঠিক রাখতে পারে না।
লেখকের শেষ কথা
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে মৌসুমী ফল প্রক্রিয়া চাঁদকরণ শিল্প আমাদের কৃষি
ভিত্তিক অর্থনীতিকে বহুমাতৃক হিসেবে এগিয়ে নিয়ে গেছে। বর্তমানে সঠিক
পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করে এবং দক্ষ মানব সম্পদ ও সরকারি বেসরকারি
বিভিন্ন উদ্যোগের সমন্বয়ে এই প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতটি আমাদের দেশের অর্থনৈতিক
অবস্থাকে বিশেষভাবে উন্নত করছে।
এজন্য আমাদের সকলেরই উচিত ফলনোত্তর অপচয় রোধ
করা। সকলের এই শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য উচিত প্রক্রিয়াজাত পণ্যের গুণগত
মান নিশ্চিত করা এবং রপ্তানি সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো।
আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url