ঈদুল আযহা সম্পর্কিত সঠিক মাসাআলা-মাসায়েল
ফ্রিল্যান্সিং শেখা বা করার জন্য পূর্ব পরিকল্পনাসম্মানিত পাঠকগণ আসসালামু-আলাইকুম। আজ আমরা জানবো ঈদুল আযহা সম্পর্কিত সঠিক
মাসালা-মাসায়েল সম্পর্কে। ঈদুল আযহা সম্পর্কিত সঠিক মাসালা-মাসায়েল জানতে
সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন।
পেজ সূচিপত্র: ঈদুল আযহা সম্পর্কিত সঠিক মাসাআলা-মাসায়েল
- ঈদুল আযহার নামাজের হুকুম এবং নিয়ম
- ঈদুল আযহার খুতবার গুরুত্ব
- কোরবানির হুকুম: কার ওপর ওয়াজিব?
- কোন পশু দ্বারা কোরবানি করা যায়? (পশুর বয়স এবং ধরন)
- কোরবানির সময়সীমা এবং সঠিক সময়
- কোরবানির গোস্তের বন্টন: কিভাবে এবং কাদের মাঝে?
- কোরবানির পশুতে অংশগ্রহণের নিয়ম গরু অথবা উট ৭ অংশে ভাগ
- কোরবানির নিয়ত এবং দোয়া সম্পর্কিত মাসআলা
- মুর্দার পক্ষ থেকে কোরবানি বৈধতা এবং মতামত
- লেখকের শেষ কথা
ঈদুল আযহার নামাজের হুকুম এবং নিয়ম
✅ ঈদুল আযহার নামাজের হুকুম এবং নিয়ম:
নামাজের হুকুম:
সাধারণত আমরা জানি ঈদ-উল-আযহার নামাজ হল সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। পুরুষদের জন্য
জামাতের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করা উত্তম। কোন মানুষ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ঈদের
জামাতে অংশগ্রহণ না করে অর্থাৎ ছেড়ে দেয় তবে তা গুননাহের হিসেবে বিবেচিত হয়।
উল্লেখযোগ্য হলো হানাফী মাযহাবে একে ওয়াজিব ও বলা হয়ে থাকে।
👉 ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম বা পদ্ধতি সমূহ:
সাধারণভাবে আমরা জানি যে ঈদুল আযহার নামাজ মূলত দুই রাকাত। এ নামাজ মূলত জুমার মত
খুতবার আগে পড়া হয় না বরং নামাজ আগে পড়া হয় তারপর খুতবা দেওয়া হয়।
✅ নামাজের সংক্ষিপ্ত নিয়মসমূহ:
১. নিয়ত করা:
নিয়ত হল যারা আরবীতে পারেন তারা আরবিতে করবেন এবং যারা আরপি পারেন না তারা
বাংলায় বলবেন আমি দুই রাকাত ঈদের নামাজ আদায় করছি ৬ তাকবীর সহ আল্লাহর জন্য
ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে কিবলামুখী হয়ে।
২. প্রথম রাকাত:
- ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু করা।
- তারপর পর্যায়ক্রমে তিনটি অতিরিক্ত তাকবীর বলা যাকে বলা হয় তাকবীরে জায়েদা মূলত।
- উল্লেখযোগ্য হল প্রতিটি তাকবীরের পর অবশ্যই হাত ছেড়ে দিবেন।
- এরপর যথারীতি ইমাম সাহেব সুরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা পড়ে রুকু এবং সিজদা করবেন।
৩. দ্বিতীয় রাকাত:
- দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম সাহেব সূরা ফাতিহা এবং সাথে অন্য একটি সূরা পড়ার পর যথারীতি আবার অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর দিবেন প্রতিবার হাত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিতে হবে।
- এরপর চতুর্থ তাকবীরে কোনোরকম হাত উঠানো ছাড়াই রুকুতে চলে যাবেন।
৪. যথাক্রমে সিজদা এবং কায়াম শেষ করে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করুন।
ঈদুল আযহার খুতবার গুরুত্ব
আমরা জানি ঈদুল আযহার খুতবা ইসলামের একটি সুন্দর অনুশীলন, যা ঈদের নামাজের পর
দেওয়া হয়। ঈদুল আযহার খুতবা কেবল আনুষ্ঠানিকতাই নয় এটি একটি ধর্মীয় দিক
নির্দেশনা এবং শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত।
খুতবার গুরুত্বের দিকসমূহ:
১. নবীজির সুন্নত অনুসরণ করা:
আমাদের নবীজি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ঈদের নামাজের পর খুতবা দিতেন এবং সাহাবীরা তা
মনোযোগ দিয়ে ভালোভাবে শুনতেন এজন্য ঈদের নামাজের খুতবা একটি গুরুত্বপূর্ণ
সুন্নাহ হিসেবে ধরা হয়।
২. ইসলামিক শিক্ষা এবং বার্তা:
মূলত ঈদুল আযহার খুতবায় কোরবানির তাৎপর্য তাকওয়া দানশীলতা ইত্যাদি বিষয়ে
আলোচনা ফুটে ওঠে। ঈদুল আযহার খুতবা মূলত মুসলিমদের জন্য ঈদের মূল শিক্ষা স্মরণ
করিয়ে দেওয়ার একটি মাধ্যম।
৩. দ্বীনি চেতনা জাগ্রত:
ঈদুল আযহার খুতবার মাধ্যমে মুসলিমরা সাধারণত আত্মশুদ্ধি এবং আল্লাহর ভয়-ভীতি
বিষয়গুলো মনে রাখে।
৪. সমাজ সংস্কার এবং সচেতনতা:
খুতবার মাধ্যমে মূলত সমাজে প্রচলিত ভুল অজ্ঞতা এবং গাফেলতির বিরুদ্ধে
দিকনির্দেশনা প্রকাশ পায়।
৫. ঈদের গুরুত্ব:
আমাদের মাঝে অনেকেই আছে যারা ঈদকে শুধুমাত্র আনন্দ এবং ভোজের দিন মনে করে থাকে।
ঈদের খুতবা মূলত মুসলিম জাতির ওপর ঈদের আত্মিক ও ধর্মীয় দিক সম্পর্কে শিক্ষা
এবং সচেতন করে।
কোরবানির হুকুম: কার ওপর ওয়াজিব?
আমরা জানি ইসলাম ধর্মে কোরবানির হুকুম ইবাদতের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি।
কোরবানি প্রতি বছর জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত সাধারণত আদায়
করা হয়ে থাকে। কোরবানির হুকুম এবং কোরবানি কার ওপর ওয়াজিব তা সম্পর্কে
বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো:
কোরবানির হুকুম:
সাধারণত আমরা জানি যে কোরবানি করা ওয়াজিব, এবং অবশ্য পালনীয় একটি ইবাদত।
কোরবানি কার ওপর ওয়াজিব!
ইসলাম ধর্মে কোরবানি তাদের ওপর ওয়াজিব যারা-
- প্রথমত মুসলিম।
- প্রাপ্তবয়স্ক।
- এক্ষেত্রে অবশ্যই বুদ্ধিমান, পাগলের ক্ষেত্রে কোরবানি ওয়াজিব নয়।
- কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই মুকিম অথবা মুসাফির নয় নিজ এলাকায় অবস্থান করুন।
- ইসলামিক দৃষ্টিতে নেশা পরিমাণ সম্পদের মালিক অর্থাৎ কোরবানি দেওয়ার জন্য যার নিকট নেশা পরিমাণ সম্পদ যেমন সোনা ও রুপার সমমূল্যের নগদ পরিমান।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: কোরবানির এ আইন পুরুষ এবং মহিলা সকলের জন্য একই ভাবে
প্রযোজ্য।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়:
- সাধারণত কোরবানি ঈদুল ফিতরের মতোই সকলের উপর ফরজ করা হয়নি বরং শুধু মাত্র উপরোক্ত শর্ত পূরণকারীদের ওপর এটি ওয়াজিব।
- মনে রাখার একটি বিষয় হল কোরবানি না করলে গুনাহ হবে যেহেতু এটি একটি ওয়াজিব ইবাদত।
কোন পশু দ্বারা কোরবানি করা যায়? (পশুর বয়স এবং ধরন)
ইসলামী শরীয়তে কোরবানির জন্য নির্ধারিত পশুর ধরুন এবং বয়স সম্পর্কে
স্পষ্টভাবে বলা আছে। নিচে কোরবানির পশুর ধরন বয়স এবং আনুষাঙ্গিক শর্ত সমূহ
আলোচনা করা হলো:
কোরবানির জন্য পশুর ধরন বা কোন পশু দ্বারা কোরবানি করা যায়:
১.উট (Camel)🐪
- কোরবানির ক্ষেত্রে উটের বয়স নিম্নতম ৫ বছর হতে হবে।
- উল্লেখ্য যে একটি উটের জন্য সাতজন ব্যক্তি কোরবানিতে অংশ নিতে পারবে এক্ষেত্রে যদি সবার নিয়ত হয় কোরবানি করার।
২. গরু, মহিষ (Cow, Buffalo)🐄 🐃
- এক্ষেত্রে গরু অথবা মহিষের জন্য কোরবানিতে অবশ্যই দুই বছর পূর্ণ হতে হবে।
- উল্লেখযোগ্য হলো একটি গরু অথবা একটি মহিষের জন্য ৭ ব্যক্তি কোরবানিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
৩. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা (Goat, Sheep Ram)🐐 🐑
- ছাগলের ক্ষেত্রে কোরবানির নিয়ম হচ্ছে বয়স অবশ্য ১ বছর পূর্ণ হতে হবে।
- ভেড়া/দুম্বা: এক্ষেত্রে কোরবানির নিয়ম সাধারণত ১ বছর, তবে যদি ৬ মাস পূর্ণ হয়, আবার দেখতে মোটাতাজা হয় তাহলেই যথেষ্ট।
- উল্লেখযোগ্য হলো এসব পশুতে একজন ব্যক্তি।
পশুর মান এবং স্বাস্থ্য:
কোরবানি করার সময় এবং সময়সীমা সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট বিধান চালু আছে। নিচে
বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরা হলো:
কোরবানি করার সময়সীমা:
শুরুর সময়:
- এক্ষেত্রে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ শেষ হবার পরেই কোরবানি করা শুরু হয়ে যায় অর্থাৎ ঈদের দিন ১০ জিলহজ।
- উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো নামাজের আগে কোনভাবেই কোরবানি করা জায়েজ না, কারণ নামাজের আগে কোরবানি করলে তা গ্রহণযোগ্য হয় না।
শেষ সময়:
- ঈদের পর ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ মুহূর্ত কোরবানি করা যায় মোট এক্ষেত্রে ৩ দিন।
অর্থাৎ:
১০ জিলহজ ঈদের দিন মূলত।
১১ জিলহজ ঈদের দ্বিতীয় দিন।
১২ জিলহজ ঈদের তৃতীয় দিন।
সাধারণত এই তিন দিনই কোরবানি করা যাবে।
সঠিক সময়:
- কোরবানি মূলত ঈদের দিন ১০ই জিলহজ নামাজের পর পরই করা সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং উত্তম সময়।
- অবশ্যই দিনের বেলা কোরবানি করা ভালো।
- রাতেও কোরবানি করা যায় তবে এক্ষেত্রে ভুলের সম্ভাবনা থাকায় তা মাকরূহ বা অপছন্দনীয় হিসেবে ধরা হয়।
🎯 স্মরণযোগ্য একটি হাদিস:
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেন:
"যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে কোরবানি করে সে শুধুমাত্র গোস্ত খাইলো
কোরবানি করলো না।""
- (সহীহ বুখারী হাদিস - ৯৮৪)
কোরবানির গোস্তের বন্টন: কিভাবে এবং কাদের মাঝে?
কোরবানি এবং কোরবানির গোশতের বন্টন কিভাবে এবং তাদের মাঝে করা হবে এটি ইসলামিক
শরীয়ত অনুযায়ী একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বর্তমানে। অবশ্যই সঠিকভাবে পালন করা
আবশ্যক। এক্ষেত্রে হাদিস অনুযায়ী যেটা পাওয়া যায় তা হল কোরবানি পশু জবাই
করার পর গোস্ত সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা সুন্নত:
১. নিচের এবং পরিবারের জন্য (১/৩) ভাগ বা অংশ:
উল্লেখিত কোরবানির বন্টন প্রক্রিয়াটি আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যরা খেতে
পারেন। কোরবানির মাংস ঘরে রেখে খাওয়া হালাল এবং সবচেয়ে উত্তম।
২. আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের জন্য (১/৩) ভাগ বা অংশ:
উল্লেখিত বন্টন অংশটি শুধুমাত্র আপনার নিকটস্থ আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশী এবং
বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে বন্টন করা হয় বিশেষ করে যারা কোরবানি দিতে পারে না এমন
আশেপাশে ব্যক্তি।
৩. গরিব এবং দুস্থদের জন্য (১/৩) ভাগ বা অংশ:
এই অংশটি শুধুমাত্র সমাজের দরিদ্র মিসকিন এবং অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করা
হয়ে থাকে এটি সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কিছু দিক নির্দেশনা:
- যদি কেউ চাই তবে এক্ষেত্রে গোস্তের বন্টন থেকে সামান্য হেরফ করা যায় তবে দরিদ্রদের অংশ থেকে কখনোই এটা করা যাবে না।
- উল্লেখযোগ্য একটি বিষয় হলো যারা কোরবানি করেছেন তারা পুরো গোস্তই খেতে পারেন তবে উত্তম হলো নিজে খাওয়া এবং অপরকে দান করা বা খাওয়ানো ।
সূরা হজ্জ (২২:৩৬) এ আল্লাহ বলেন:
"তোমরা তা খাও এবং অভাবগ্রস্ত ও প্রার্থনা কারীদেরকে খাওয়াও।"
কোরবানির পশুতে অংশগ্রহণের নিয়ম গরু অথবা উট ৭ অংশে ভাগ
ইসলামী শরীয়ত অনুসারে বা দৃষ্টিতে গরু অথবা উট কোরবানির জন্য সাতজন ব্যক্তি
অংশগ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণের জন্য কিছু শর্ত এবং নিয়ম আছে যেগুলো
মানা অত্যন্ত জরুরি:
গুরু অথবা উঠে কোরবানির ৭ অংশে শরিক হওয়ার নিয়ম সমূহ:
১. অংশগ্রহণকারী সবাইকে কোরবানির নিয়ত করতে হবে:
- কোরবানির অংশে যারা ভাগে আছেন তাদের প্রত্যেকের নিয়ত একই হতে হবে কোরবানি করছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য।
- এক্ষেত্রে যদি কেউ কোরবানি না করে শুধুমাত্র গোস্ত খাওয়ার জন্য অংশ নেয় তবে পুরো কোরবানি সহি বা সঠিক হবে না।
২. পশু হতে হবে নির্দিষ্ট বয়সের এবং স্বাস্থ্যসম্মত :
- গরু কোরবানির ক্ষেত্রে ২ বছর বয়স কমপক্ষে।
- উটের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ বছর বয়স।
- উল্লেখযোগ্য হল পশুটি অবশ্যই সব দিক থেকে দোষমুক্ত বা ত্রুটিমুক্ত হতে হবে।
৩. কোরবানির অংশীদারদের মধ্যে সঠিকভাবে বন্টন:
- কোরবানিতে যারা অংশ নিয়েছে অর্থাৎ অংশীদারদের মধ্যে মাংস সমান ভাবে বন্টন বা ভাগ করতে হবে।
- অবশ্যই অনুমানের ভিত্তিতে না সঠিকভাবে মাফ করতে হবে যেন কেউ কম বা বেশি না পায়।
উল্লেখযোগ্য যদি সাতজনের বেশি কোরবানিতে একসঙ্গে অংশগ্রহণ করে তবে কোরবানি
বাতিল হয়ে যাবে।
কোরবানির নিয়ত এবং দোয়া সম্পর্কিত মাসআলা
কোরবানির নিয়ত এবং দোয়া সম্পর্কে শরীয়তে বিশেষভাবে বলা আছে। নিচে তা দেওয়া
হলো:
১. কোরবানির নিয়ত: (আরবিতে নিয়্যাহ)
মূলত কোরবানির জন্য মুখে নিয়ত করাই আবশ্যক বা মূল কথা নয়। এক্ষেত্রে আপনার
অন্তরের সংকল্প বা ইচ্ছায় যথেষ্ট বলে বিবেচিত। তবে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে
মুখে নিয়ত করা সুন্নত।
কোরবানির আরবি নিয়ত:
উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন উদাহ-হিয়া লিল্লাহি তা'আলা
অর্থ: এর অর্থ হলো আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বা লক্ষ্যে কোরবানি
দেওয়ার নিয়ত করলাম।
২. কোরবানির সময় পড়ার দোয়া:
ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী যখন আপনি কোরবানির পশু জবাই করবেন তখন এভাবে দোয়া
করবেন:
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার, আল্লাহুম্মা হাজা মিনকা ওয়া লাকা।
অর্থ: আল্লাহর নামে, আল্লাহ মহান হে আল্লাহ তোমার পক্ষ থেকে তোমারই উদ্দেশ্যে।
মুর্দার পক্ষ থেকে কোরবানি বৈধতা এবং মতামত
আপনি যদি বোঝাতে চান মুর্দার পক্ষ থেকে অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে যদি
কোরবানি দেওয়া বৈধ কিনা তবে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে এর একটি সুনির্দিষ্ট
ব্যাখ্যা রয়েছে নিচে তা দেওয়া হলো:
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি ইসলামী শরীয় দৃষ্টিকোণ:
১. জায়েজ অথবা বৈধতা:
- বিশেষ করে ইসলামিক ফিকহের অধিকাংশ মাযহাবই এর মতে মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া বৈধ এবং এটি একটি নেক কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। মূলত কোরবানি হলেও এটি সাদকা হিসেবে বিবেচিত হয়। এতে করে মৃত ব্যক্তির রুহের ফায়দা হয়।
২. নিয়ত সহকারে কোরবানি:
- ইসলামিক দৃষ্টিকোণ অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য একটি কথা হলো যদি কোন ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় বলে যায় যে তার মৃত্যুর পর যেন তার পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় তবে তা পালন করা সুন্নত এবং খুবই উত্তম।
- আবার যদি এরূপ কিছু না বলেন তবে তার উত্তরাধিকারী বা পরিবারের লোকজন ইচ্ছা করলেই তার পক্ষ থেকে কোরবানি আদায় করতে পারেন।
৩. সহিহ হাদিস অনুযায়ী প্রমাণ:
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নিজে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এবং উম্মতের পক্ষ থেকেও
কোরবানি করেছেন।
[হাদিস: সুনান আবু দাউদ: ২৮১০]
উক্ত হাদিসে বলা হয়েছে যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন লোকের
পক্ষ থেকে কুরবানী করেছেন যারা নিজেরা কখনো কোরবানি করেনি, এর মধ্যে মৃত
ব্যক্তিও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
সর্বোপরি মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া ইসলাম ধর্মে বৈধ এবং সওয়াবের
একটি কাজ বা অংশ। কোরবানি করা হলেও মৃত ব্যক্তির জন্য সাধারণত একটি সাদকা
হিসেবে গণ্য হয়।
লেখকের শেষ কথা
ঈদুল আযহা সম্পর্কিত সঠিক মাসালা মাসায়েল সম্পর্কে লেখক তার শেষ কথায়
বিশেষভাবে কিছু উপদেশ মূলক এবং তাওফিক কামনার কথা বলেছেন যেমন:
ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে কুরবানীর হুকুম সমূহ সঠিকভাবে
বোঝার এবং তা বাস্তব জীবনে আমল করার তাওফিক দেন বা দান করুন। আমরা যেন কোরবানি
আদায়ের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য বা সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।
কোরবানি মূলত আমাদের শেখায় সহমর্মিতা এবং ত্যাগের চেতনা।
আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url