আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের আয়ের পথ

যুক্তরাজ্যে বিনামূল্যে অনলাইন কোর্স করার উপায়সম্মানিত পাঠকগণ আসসালামু-আলাইকুম। আজকে আমরা জানবো আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের আয়ের পথ সম্পর্কে। আশাকরি সম্পূর্ণ পোস্ট জুড়ে আমাদের সাথেই থাকবেন।

পেজ সূচিপত্র: আমেরিকায় শিক্ষার্থীদের আয়ের পথ।

অন ক্যাম্পাস পার্ট টাইম কাজ আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য আশা শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক চাপ একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। টিউশন ফি বাসস্থান খাওয়া-দাওয়া ও অন্যান্য খরচ মেলে মাসিক বাজেট অনেক সময় বেশি পরে যায়। এই কারণে অনেক শিক্ষার্থী খুঁজে নেন, অন ক্যাম্পাস পার্ট টাইম জব তবে আমি নিজেও একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হয়ে এই পথেই হাঁটছি। 

আমেরিকায় প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অন ক্যাম্পাস চাকরির সুযোগ থাকে কারণ কাজের ধরন গুলো বেশ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন লাইব্রেরী ক্যাফেটেরিয়াতে কাজে ও আইটি হেল্প ডেক্স। আমি ব্যক্তিগতভাবে লাইব্রেরীতে কাজ করেছিলাম কাজ ছিল সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা এ সময় বই নিয়ে কাজ শেখা। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা প্রতি সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘন্টা কাজ করতে পারে ক্লাস চলাকালীন সময়ে এ সময় আর ছুটি সময় তা বেড়ে হয়ে যেতে পারে চল্লিশ ঘন্টায়।

একজন ছাত্র প্রতি ঘন্টায় সাধারণত ১০ থেকে ১৫ ডলার পর্যন্ত উপার্জন করতে পারে যদি এটি কাজের ধরন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে। তবে ঘরে দেখা যায় মাসে ৬০০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা সম্ভব যা দৈনন্দিন জীবনের খরচের একটি বড় অংশ হতে পারে।

টিউটরিং বা শিক্ষাদান

আমেরিকায় পড়তে আসা একজন শিক্ষার্থীর জন্য জীবনটা একেবারে নতুন অধ্যায় হিসেবে পরিচালিত হয়। পরিবেশ সংস্কৃতি ভাষা সবকিছুতেই নতুন, এবং খরচ ব্যয় বহন হয়ে থাকে এর মধ্যেই যখন নিজের খরচ চালানোর জন্য কিছু কাজ প্রয়োজন পড়ে। এ খরচ চালানোর জন্য পার্ট টাইম জব খোঁজে।

টিউটরিং এমন একটি কাজ যেখানে আপনি আপনার শেখা জ্ঞান অন্য কাউকে শেয়ার করেন এবং সে বিনিময়ে সে আপনাকে কিছু পরিমাণে অর্থ পেমেন্ট করে যেমন বাংলাদেশে কোচিং প্রাইভেটে এমন হয়ে থাকে বেতনের মত কিছুটা সিস্টেম সবচেয়ে বড় কথা আপনাকে এই কাজ করতে কোন ফিজিক্যাল শ্রম দেওয়া লাগে না বরং আপনার মস্তিষ্কই আপনার মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে।

অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা নির্দিষ্ট কোষ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে টিউটরের চাহিদা প্রচুর। কেউ বিভিন্ন কোর্সের জন্য প্রাইভেট টিউটর খোঁজে যেমন ( SAT, GRE,GMAT ) এর প্রস্তুতির জন্য প্রাইভেট টিউটরের অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

ফুড ডেলিভারি সার্ভিস

ফুড ডেলিভারি সার্ভিসের ইনকাম নির্ভর করে আপনার লোকেশন সময় কতটা কাজ করেন তার উপরে। দিনে ৩-৪ ঘন্টা কাজ করে দিনে ৫০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব। রাতের বেলায় অর্ডার বেশি আসে আর তখন টিপস ও ভালো পাওয়া যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবেই বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত কাজ করে প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ ডলার ইনকাম করতাম।

ফুড ডেলিভারি করতে আপনাকে প্রথমে যেকোনো একটি বা একাধিক ডেলিভারি অ্যাপ এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে যেমন: Door Dash, Uber Eats, GrubHub এই সমস্ত অ্যাপ গুলোতে সাইন আপ করতে হবে এর জন্য একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স সামাজিক নিরাপত্তা নাম্বার এবং একটুখানি ব্যাকগ্রাউন্ড চেকের প্রয়োজন হয়। কিছু কিছু শহরে বাইসাইকেল বা স্কুটার দিয়ে ডেলিভারি করা যায় যা সহজ মাধ্যম। ও সুবিধা জনক।

আমেরিকায় পড়তে আসা একজন শিক্ষার্থীর জন্য জীবনটা একেবারে নতুন অধ্যায় হিসেবে পরিচালিত হয়। পরিবেশ সংস্কৃতি ভাষা সবকিছুতেই নতুন, এবং খরচ ব্যয় বহন হয়ে থাকে এর মধ্যেই যখন নিজের খরচ চালানোর জন্য কিছু কাজ প্রয়োজন পড়ে। এ খরচ চালানোর জন্য পার্ট টাইম জব খোঁজে।

রাইড শেয়ার ড্রাইভিং

আমেরিকায় পড়াশোনা করার অনেক শিক্ষার্থী যারা আর্থিক চাপে অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে যায় টিউশন ফি থাকা-খাওয়া বই খাতা এবং দৈনন্দিন জীবনের অন্যান্য খরচ মেটাতে বাড়তি আয়ের উৎস খুঁজে পাওয়ার জন্য তারা কাজী খুঁজে তার মধ্যে একটি হল রাইট শেয়ার ড্রাইভিং শিক্ষার্থী আছে যারা পার্ট টাইম চাকরি করতে চাই কিন্তু সময়ের অভাবে অথবা কাজের সুযোগ কম।

থাকার জন্য হয় না এরকম পরিস্থিতিতে রাইট শেয়ার ড্রাইভিং আয়ের একটি সহজ ও জনপ্রিয় মাধ্যম রাইড শেয়ার ডাইভিং হল এমন একটি সেবা যেখানে আপনি নিজে গাড়ি ব্যবহার করে অন্যদের গন্তব্যে পৌঁছে দেন। সাধারণভাবে ড্রাইভার এর জন্য সীমা একুশ বছর অথবা তার বেশি বৈধ ডাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির উপযুক্ত অবস্থায় থাকতে হবে এবং অবশ্যই গাড়ির নির্দিষ্ট ট্রাফিক মেনে চলতে হবে।

অনলাইন স্টোর

অনলাইন স্টোর মানে হল এমন একটি ভার্চুয়াল দরকার যা আপনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য করতে পারেন। এখানে গ্রাহকরা ওয়েবসাইট বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার পণ্যর ছবি বা তথ্য দেখে অর্ডার করতে পারে এবং আপনি সেটা ডেলিভারি করে টাকা উপার্জন করতে পারেন।

কম খরচে শুরু করা যায় এটা একটি ফিজিক্যাল দোকানের তুলনায় অনলাইন স্টোর হওয়ায় অনেক সহজ ও খরচ অনেক কম আপনার শুধু একটা ওয়েবসাইট বা ফেসবুকে থাকলেই চলবে ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজের মাধ্যমে আপনার পন্যর এড দেখে গ্রাহকদের সেই পণ্য কিনতে আগ্রহী বাড়িয়ে তোলে আপনি ঘরে বসেই পুরো ব্যবসা নিজ হাতে চালাতে পারেন গ্রাহক আসবে ২৪ ঘন্টায় কোন বন্ধ থাকবে না।

লাইন স্টোর একটি খুব সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম অনলাইন স্টোর খোলার জন্য একটি নির্দিষ্ট নাম ঠিক করতে হবে সুন্দর ও ইউনিক নাম বেছে নিন। যা আপনার নির্দিষ্ট একটি ব্র্যান্ড হতে পারে সাধারণ ফিজিক্যাল ব্যবসার চেয়ে অনলাইন বিজনেস করা অত্যন্ত ভালো কারণ ফিজিক্যাল ব্যবসা আপনি ২৪ ঘন্টা চালাতে পারবেন না আপনি অসুস্থ হয়ে পড়বেন আর অনলাইনের ব্যবসা আপনি ২৪ ঘন্টায় চালাতে পারবেন ঘরে বসে।

লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়ায় চাকরি করার সুবিধা

লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়ায় সুবিধা লাইব্রেরিতে কাজ মানে একটি শান্ত পরিবেশে কাজ করা। লাইবের তে শিক্ষার্থীরা সাধারণত এখানে বই রিটান ও বই চেক আউট করে, লাইব্রেরীতে আপনাকে বই সাজানো কম্পিউটার ডেক্সে সাহায্য করা কিংবা সাধারণ তথ্য সরবরাহের তো দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই কাজগুলো তুলনামূলক খুব সহজ ও চাপমুক্ত তাই এই কাজ করে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য সময় বের করে নিতে পারে।

লাইব্রেরীর একটি বাড়তি সুবিধা আছে লাইব্রেরীতে কাজ করতে করতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন একাডেমিক রিসোর্স বা রেফারেন্স সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে যা তাদের লেখাপড়ায় সাহায্য করতে পারে। অনেক সময় লাইব্রেরীতে কাজের চাপ কম থাকলে ফাঁকে ফাঁকে পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়া যায়।

ক্যাফেক্টারিয়ায় কাজ তুলনামূলকভাবে একটু কষ্টকর হলেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। যা এক ধরনের অভিজ্ঞতা দেয়, ফুড সার্ভিস কাস্টমার কাস্টমার হিনেচজ ও কিচেনে হেল্প এই কাজগুলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে টাইম ও টিমওয়ার্ক দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা গড়ে তোলে এছাড়াও ক্যাফেকেরিয়ায় অনেক শিক্ষার্থী কাজ করে ফ্রি খাবার ও ডিসকাউন্ট পাই যা তাদের মাসের খরচ কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে।

ব্লগিং বা ইউটিউব কনটেন্ট তৈরি

ব্লগিং বা ইউটিউব কনটেন্ট তৈরি করে আজকাল অনেকেই নিজের জীবিকা নির্বাহ করে। ব্লগিং করার মাধ্যমে উপার্জন করতে পারেন যদি আপনার লেখার প্রতি আগ্রহ থাকে তবে ব্লগিং হতে পারে আপনার জন্য উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম আপনি নিজেই ওয়েবসাইট কিংবা Medium, Blogger ও Substack মত প্লাটফর্মে  নিজের লেখা কাজ করতে পারেন।

ব্লগিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি একবার শুরু করলে সময়ের সাথে সাথে ইনকামের উৎস হতে পারে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না আপনি লেখালেখি করে যেমন নিজের চিন্তা ভাবনা প্রকাশ করতে পারেন তেমনি একটি অনলাইনে পরিচিত করে তুলতেও পারেন ব্লগিং করে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনি বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

যারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে পছন্দ করেন বা ক্যামেরার সামনে সুযোগ পেলে যারা কথা বলতে ভালোবাসেন বা ভিডিও তৈরি করতে আগ্রহী তাদের জন্য ইউটিউব একটি দুর্দান্ত প্ল্যাটফর্ম একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই আপনি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে মাসে বিপুল পরিমাণে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

অনলাইন সার্ভে এবং মাইক্রো টাস্ক

অনলাইন সার্ভে এবং মাইক্রো টাস্ক। অনলাইন সার্ভে হলো একটি ইন্টারনেটের নানা ধরনের প্রশ্ন বলি ও ফিডব্যাক ফর্মপূরণ করা। যা হলো বিভিন্ন মার্কেট রিচার্জ কোম্পানি যা নিজেদের ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠান নতুন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে মতামত নিয়ে সার্ভে চালাই অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা এই সার্ভে পূরণ করে ছোটখাটো অর্থ উপার্জন করে।

অনলাইন সার্ভে ও মাইক্রো টাস্ক হলো সে ধরনের কাজ যা শিক্ষার্থীদের জন্য সাফল্যের চাবি ঝুকিমুক্ত আয়ের পথ যদিও এখানে আয়ের পরিমাণ কম তবে ঝুঁকিমুক্ত। তবে ও এই অতিরিক্ত আয় অনেক ছোটখাটো খরচ মেটাতে দিতে পারে আমেরিকায় পড়াশোনার রোজ সামলাতে বা নিজের কিছু মজুরি হিসেবে এই কাজগুলো একদম সহজ ও কার্যকর হিসেবে পরিচিত।

লেখকের শেষ কথা

আমেরিকায় পড়াশোনা করা মুখের কথা নয় আমেরিকা পৃথিবীর একটি ধনী রাষ্ট্র। পড়াশোনার পাশাপাশি আয়ের পথ খুঁজে পাওয়া সহজ নয় কিন্তু একটু চেষ্টা আর ধৈর্য থাকলে সম্ভবনার দরজা সব সময় খোলা থাকে। যেমন লাইব্রেরী বা ক্যাফেটেরিয়ায় চাকরি থেকে শুরু করে ব্লগে বা ইউটিউব কন্টেন্ট অথবা অনলাইন সার্ভে এই সমস্ত সুযোগ শিক্ষার্থীদের জন্য আয়ের পথ তৈরি ও নিজস্ব অর্থনৈতিক স্বাধীনতা গড়ার জন্য গুরুত্ব পূর্ণ।

আমেরিকায় পড়াশোনা চাপে মাঝে মাঝে এই সুযোগগুলো গ্রহণ করুন আপনার থাকা-খাওয়া ও বাসা ভাড়া এগুলো থেকে কিছু হলেও অর্থ উপার্জন করতে করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url