ঘরে বসে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন (বিউটি টিপস)

ওজন কমানোর জন্য সেরা ১০ টি ঘরোয়া উপায়সম্মানিত পাঠকগণ আসসালামু আলাইকুম। অনেকেই বর্তমান সময়ে নিজের ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন এমন নানান চিন্তা ভাবনা করেন। তো ঘরে বসে কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন তার কিছু বিউটি টিপস নিয়ে আলোচনা করব। অবশ্যই ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন তার বিউটি টিপস সম্পর্কে জানার জন্য সম্পূর্ণ পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন।


পেজ সূচিপত্র:ঘরে বসে কিভাবে ত্বকের যত্ন নেবেন (বিউটি টিপস)

প্রাকৃতিক উপাদানে মুখ পরিষ্কার করা (ক্লিনজিং)

ঘরে বসে ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য নিশ্চয়ই প্রাকৃতিক উপাদান ক্লিনজিং খুবই সহায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। নিচে কিছু সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি বা উপায় বলা হলো:

১. দুধ দিয়ে ক্লিনজিং:
  • উপকরণ সমূহ: কাঁচা দুধ মূলত।
  • পদ্ধতি: সাধারণত তুলোর বল দুধে ভিজিয়ে চুবিয়ে নিয়ে তা মুছে নিন। এরপর কিছুক্ষণ রেখে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নিন।
  • উপকারিতা: ত্বকের ময়লা দূর করে এবং ত্বকের ময়েশ্চারাইজ করে মূলত।
২. মধু এবং লেবু:
  • উপকরণ সমূহ: এক্ষেত্রে অবশ্যই এক চা চামচ পরিমাণ মধু আর কয়েক ফোঁটা লেবুর রস ইত্যাদি।
  • পদ্ধতি: লেবু এবং মধু মিশ্রিত টি ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে আলতো করে মেসেজ করুন ২-৩ মিনিট পর্যন্ত তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে তা ভালোভাবে ধুয়ে নিন।
  • উপকারিতা: মধু মূলত ত্বক হাইড্রেট করে এবং লেবু সাধারণত ব্রণ ও ত্বকের দাগ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
৩. অ্যালোভেরা জেল:
  • উপকরণ: এক্ষেত্রে অবশ্যই খাঁটি  অ্যালোভেরা জেল প্রয়োজন।
  • পদ্ধতি: অ্যালোভেরা জেল মুখে ভালোভাবে মেসেজ করুন তারপর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
  • উপকারিতা: অ্যালোভেরা জেল মূলত ত্বক ঠান্ডা রাখে ব্রণ কমায় এবং ত্বকের আদ্রতা অনেকাংশে বজায় রাখতে সাহায্য করে।
৪. শসার রস:
  • উপকরণ সমূহ: শসার রসের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনি শসা ব্লেন্ড করে রস করে নেবেন।
  • পদ্ধতি: অবশ্যই শসার রসটি তুলোর সাহায্যে আপনার মুখে মাখবেন। তারপর 10 মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
  • উপকারিতা: শসার রস আমাদের ত্বক সব সতেজ রাখে এবং সানবার্ন অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।

মৃত কোষ দূর করার উপায় সপ্তাহে দুই দিন স্ক্রাবিং

সাধারণভাবে ঘরে বসে ত্বকের মৃত কোষগুলি অন্তত সপ্তাহে দুই দিন স্ক্রাবিং করা দারুন একটি কার্যকরী উপায়। তো চলুন আমরা এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানি:

স্ক্রাবিং কেন দরকার:
 সাধারণভাবেই আমরা জানি যে ত্বকের উপরের স্তরে মৃত কোষ যদি থাকে তবে সেক্ষেত্রে আপনার ত্বক মলিন দেখায় ব্রণ হয় এবং স্কিনের উজ্জ্বলতা ও হারিয়ে যায়। স্কাবিং মূলত সেই মৃত কোষগুলোকে সরিয়ে দিয়ে আপনার ত্বক ফ্রেশ মসৃণ এবং উজ্জ্বল করে।

কিভাবে স্ক্রাব করবেন:
  1. স্ক্রাবিং করার জন্য প্রথমেই আপনার মুখ ভালোভাবে পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন।
  2. স্ক্রাপটি হাতে নিয়ে প্রাথমিকভাবেই হালকা ভেজা ত্বকে লাগাবেন।
  3. আঙ্গুল দিয়ে হালকা করে চাপ দিয়ে ঘূর্ণায়মান ভাবে আলতো করে  ম্যাসাজ  করুন।
  4. অবশ্যই দুই থেকে তিন মিনিট পর্যন্ত ম্যাসাজ করার পরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
  5. এরপর পর্যায়ক্রমে আপনি একটি মহেশচার রাইজার ব্যবহার করুন যাতে আপনার ত্বক অনেকক্ষণ পর্যন্ত ময়েশ্চারাইজ থাকে।
ঘরে বসে যেভাবে প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করবেন:
  • চিনি এবং মধু স্ক্রাব: এক্ষেত্রে আপনি এক চা চামচ পরিমাণ চিনি এবং এক চা চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
  • বেসন এবং দই স্ক্রাব: এতে করে আপনি এক চামচ পরিমাণ বেসন এবং সমপরিমাণ দই মিশিয়ে স্ক্রাব করুন।
  • ওটস এবং দুধ স্ক্রাব: এক্ষেত্রে দুধের সাথে সামান্য ও গুঁড়ো করে মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করুন।
খেয়াল রাখবেন বা মনোযোগ রাখবেন:
  • অবশ্যই সপ্তাহে দুই বার স্ক্রাব যথেষ্ট বেশি স্ক্রাবিং করলে ত্বক অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • অবশ্যই মনে রাখার একটি বিষয় হল যদি আপনার ত্ব ক খুবই সেনসিটিভ হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে হালকা স্ক্রাব করা উত্তম।
  • এরপর আপনি স্ক্রাব করার পর অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে মোটেও ভুলবেন না রে যদি আপনি বাইরে বের হন তবেই।

ঘরোয়া উপাদানে উজ্জ্বল ত্বক (ফেসপ্যাক ও মাস্ক)

ঘরে বসে প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই কার্যকর একটি উপায় বা পদ্ধতি। ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য নিচে কিছু প্রাকৃতিক ঘরোয়া ফেসপ্যাক এবং মাস্কের রেসিপি তুলে ধরা হলো যা নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং অনেকাংশে কোমল হবে :

১. দুধ এবং হলুদের ফেসপ্যাক
উপকরণ সমূহ
  • এক চা চামচ পরিমাণ কাঁচা দুধ
  • এক চিমটি ভাজা অথবা তাজা যে কোন হলুদ
প্রস্তুত এবং ব্যবহার: কাঁচা দুধ এবং হলুদের মিশ্রিত উপাদান গুলি ভালোভাবে মুখে লাগিয়ে অন্তত ১৫ মিনিট পর্যন্ত রাখুন। এরপর পর্যায়ক্রমে আপনি কুসুম গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। উল্লিখিত মিশ্রণটি আপনার ত্বক পরিষ্কার করে এবং উজ্জ্বলতা অনেকাংশে বৃদ্ধি করে।

২. মধু এবং লেবুর মাস্ক
উপকরণ সমূহ
  • প্রথমত এক চা চামচ পরিমাণ মধু
  • তারপর এক চা চামচ পরিমাণ লেবুর রস
প্রস্তুত এবং ব্যবহার: উক্ত মধু এবং লেবুর মিশ্রণটি আপনার মুখে লাগিয়ে অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত রাখুন। পর পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন। উল্লিখিত উক্ত মিশ্রণটি আপনার ত্বক ফর্সা করে এবং দাগ কমিয়ে দেয়।

৩. আলু এবং গোলাপ জল মাস্ক
উপকরণসমূহ:
  • প্রাথমিক এক চা চামচ পরিমাণ আলুর রস
  • এক চা চামচ পরিমাণ গোলাপ জল
বস্তুত এবং ব্যবহার: উক্ত মিশ্রণটি তুলার মাধ্যমে আপনার মুখে লাগান। পর্যায়ক্রমে যদি শুকিয়ে যায় তারপর ধুয়ে ফেলুন। উক্ত মিশ্রিত উপাদান টি আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে সহায়ক।

টিপস:
  • অন্ততপক্ষে আপনি সপ্তাহের দুই থেকে তিন বারের ব্যবহার করুন।
  • অবশ্যই মনে রাখবেন ব্যবহার করার আগে আপনি প্যাচ টেস্ট করুন যাতে এলার্জির কোন সমস্যা না সৃষ্টি হয়
  • সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো মাস্ক লাগানোর পর রোদে না যাওয়াই উত্তম।

ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার বাছাই করা

আপনার ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য ত্বক অনুযায়ী সঠিক ময়েশ্চারাইজার রাইজার নির্বাচন করা খুবই জরুরী। সঠিক মহেশচারাইজার ব্যবহারে আপনার ত্বক উজ্জ্বল এবং অনেকাংশে সজীবতা থাকে। নিচে ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে কিভাবে ধরন অনুযায়ী ত্বকের জন্য ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করবেন তা দেওয়া হলো:

১. তৈলাক্ত ত্বক (Oily Skin) 
উপাদান: 
  • প্রথমত অ্যালোভেরা জেল শুদ্ধ অথবা প্রাকৃতিক যেকোনো একটি
  • পরিমাণ মতো গোলাপজল
ব্যবহার:  অ্যালোভেরা জেল এবং গোলাপজল ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার মুখে লাগান। উক্ত মিশ্রণটি আপনার ত্বকে হাইড্রেট রাখে কিন্তু তেল তেলে ভাব তৈরি থেকে দূরে রাখে।

২. শুকনো ত্বক (Dry Skin)
উপাদান:
  • এক্ষেত্রে নারীকেল তেল ভার্জিন কোকোনাট অয়েল
  • অলিভ অয়েল তেল
  • দুধের সর বা মালাই
ব্যবহার: এক্ষেত্রে ১ চা চামচ পরিমাণ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল তেল রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মুখে মালিশ করুন। এক্ষেত্রে দুধের সর বা মালাই ও প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ভালো।

৩. সমন্বিত ত্বক (Combination Skin) 
উপাদান:
  • মধু
  • অ্যালোভেরা জেল
  • কয়েক ঘন্টাটা লেবুর রস আপনার পরিমাণ যতটুকু লাগে
ব্যবহার: এক্ষেত্রে আপনি মধু এবং অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মুখে ব্যবহার করুন। উক্ত মিশ্রণটি আপনার শুষ্ক অংশে আদ্রতা নিয়ে আসে এবং তৈলাক্ত অংশের ভারসাম্য বজায় রাখে।

৪. সংবেদনশীল ত্বক (Sensitive Skin)
উপাদান:
  • প্রথমত অ্যালোভেরা জেল 
  • কেমো মাইল চা অথবা শসার রস প্রভৃতি বিশেষ
ব্যবহার: এক্ষেত্রে আপনি অ্যালোভেরা জেল এর সাথে সামান্য শসার রস মিশিয়ে আপনার মুখে লাগাবেন। উল্লিখিত মিশ্রণটি আপনার ত্বকের ঠান্ডা প্রভাব দেয় এবং রেস বা জ্বালাময় প্রভাব দূর করে।

অতিরিক্ত কিছু টিপস:
  • মনে রাখবেন সব ধরনের ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
  • অবশ্যই দিনের বেলা আপনি হালকা ও নন-কমেডজনিক উপাদান ব্যবহার নিশ্চিত করুন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মুখ পরিষ্কার করে ভালোভাবে হালকা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া টিপস

ঘরে বসে ত্বকের দাগ দূর করার জন্য সহজ কিছু অনুসরণযোগ্য ঘরোয়া টিপস নিচে আলোচনা করা হলো:

১. লেবুর রস এবং মধুর মিশ্রণ
উপকারিতা: লেবু আমাদের ত্বকের দাগ হালকা দূর করে এবং মধু ত্বকে অনেকাংশে ময়েশ্চারাইজ রাখে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
  • প্রথমত এক চা চামচ লেবুর রস এবং এক চা চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে আপনার মুখে লাগান।
  • এরপর পর্যায়ক্রমে 15 মিনিট পর্যন্ত রাখার পর কুসুম গরম পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।
  • অবশ্যই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
২. আলুর রস
উপকারিতা: আমরা জানি আলোতে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান আছে যা আমাদের ত্বকের হালকা দাগ দূর করে।
ব্যবহার:
  • প্রাথমিকভাবে একটি আলো কেটে তার রস বের করে নিতে হবে।
  • তুলোর সাহায্যে আলুর রস আপনার ত্বকের দাগের উপরে লাগান এবং ২০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলুন।
৩. অ্যালোভেরা জেল
উপকারিতা: অ্যালোভেরা জেল মূলত আমাদের ত্বকের পুনর্গঠন করে এবং দাগ দূর করে থাকে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
  • বিশুদ্ধ বা প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা জেল প্রতিদিন ঘুমানোর আগে আপনার ত্বকের ওপর লাগাবেন।
  • সকালে পরিষ্কার পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।
ওপরে উল্লিখিত টিপস গুলি যদি আপনি নিয়মিত অনুসরণ করেন তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনি আপনার ত্বকের দাগ হালকা দূর হয়েছে এমন দেখতে পাবেন।

ডার্ক সার্কেল কমাতে প্রাকৃতিক সমাধান

আপনার ত্বকের ডার্ক সার্কেল ঘরে বসে কমানোর জন্য কিছু কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায় নিচে আলোচনা করা হলো:

১. শসার টুকরা:
শসা মূলত আমাদের ত্বক ঠান্ডা রাখে এবং ডার্ক সার্কেল হালকা কমিয়ে দেয়।
ব্যবহার:
  • একটি ভালো ঠাণ্ডা শসা কেটে আপনার চোখের ওপর 10 থেকে 15 মিনিট পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন।
  • পর্যায়ক্রমে ঠান্ডা পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।
  • প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একবার ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
২. আলুর রস:
 আমরা জানি আলোতে প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান আছে যা আমাদের ত্বকের হালকা দাগ দূর করে।
ব্যবহার:
  • প্রাথমিকভাবে একটি আলো কেটে তার রস বের করে নিতে হবে।
  • তুলোর সাহায্যে আলুর রস আপনার ত্বকের দাগের উপরে লাগান এবং ২০ মিনিট পর তা ধুয়ে ফেলুন।
৩. নারকেল তেল:
নারকেল তেল আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করে এবং মহেশচারাইজ করে রাখে।
ব্যবহার পদ্ধতি:
  • প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে আপনার চোখের নিচে নারকেল তেল লাগিয়ে নিন।
  • এরপর হালকা করে মাসাজ করুন।
  • এবং সকালে পরিষ্কার পানি দিয়ে তা ধুয়ে ফেলুন।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম এবং পানি:

  • প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম খুবই প্রয়োজন।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করার জন্য আপনার ত্বক অনেকাংশে হাইড্রেট থাকে যার ফলে ডার্ক সার্কেল হয় না।
আপনি যদি চান সেক্ষেত্রে ওপরে উল্লেখিত পদ্ধতি গুলোর মধ্যে যেটি আপনার জন্য বিশেষ কার্যকরী হতে পারে তার জন্য বিস্তারিত রুটিন তৈরি করে দিতে পারি।

ত্বক টান টান রাখতে ফেস এক্সারসাইজ এবং ম্যাসাজ

ঘরে বসে আপনার ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য টক টানটান রাখতে আপনি কিছু সহজ ফেস এক্সারসাইজ এবং ম্যাসাজের মাধ্যমে ভালো ফল নিশ্চিত করতে পারেন। নিচে কিছু কার্যকরী উপায় তুলে ধরা হলো:

ফেস এক্সারসাইজ (Face Yoga)

১. চিক বোন লিফট
কীভাবে করবেন:
  • এর জন্য প্রাথমিকভাবে আপনি হাসুন এবং আঙ্গুল দিয়ে আপনার গালের উপরের অংশ হালকা ভাবে তোলার চেষ্টা করবেন।
  • ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত এভাবে মাসাজ করবেন।
  • অন্ততপক্ষে পাঁচ থেকে সাত বার করা ভালো।
২. ফিশ ফেস এক্সারসাইজ
কিভাবে করবেন:
  • দুই হাত দিয়ে গাল টেনে ধরে মুখে ফিশের মতো ভঙ্গি করুন।
  • এভাবে আপনি 10 সেকেন্ড পর্যন্ত থাকুন এবং বিশ্রাম নিন।
  • দিনে অন্তত দশবার করতে পারেন।
৩. জ ফার্মিং
কিভাবে করবেন:
  • মাথা পেছনের দিকে নিন এবং সাত বা আকাশের দিকে তাকিয়ে দিন।
  • আপনার মুখের নিচের চোয়াল সামনের দিকে যতটা সম্ভব এগিয়ে দিন।
  • ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত এভাবে করুন।
  • অন্ততপক্ষে পাঁচ বার করা ভালো।

ফেস ম্যাসাজ (Face Massage)

১. আঙ্গুল দিয়ে ত্বকের ওপরে চাপ দিন
  • আপনি আপনার আঙ্গুল দিয়ে কপাল গাল এবং চোয়ালের ত্বকে হালকা ভাবে উপরের দিকে ম্যাসাজ করুন ভালোভাবে।
  • প্রতিদিন অন্ততপক্ষে পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত এভাবে ম্যাসাজ করুন।
২. নারকেল তেল অথবা এলোভেরা জেল ব্যবহার
  • আপনার ত্বক সহজেই মাসাজ করার জন্য একটি প্রাকৃতিক তেল ব্যবহার নিশ্চিত করুন যেমন নারকেল তেল অথবা এলোভেরা জেল ইত্যাদি।
  • উক্ত উপাদানগুলি আপনার ত্বক হাইড্রেট রাখে এবং অনেকাংশের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
৩. আইস কিউট  ম্যাসাজ
  • উক্ত পদ্ধতিটি হল বরফের টুকরা কাপড়ে মুড়িয়ে নিয়ে আপনার মুখে ঘোরান।
  • এটি আপনার রক্ত সঞ্চালন যেমন বাড়ায় তেমনি ত্বক টানটান করে তোলে।
ওপরে উল্লিখিত এক্সারসাইজ এবং মাসাজ গুলি আপনি যদি দিনে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত করেন তাহলেই ধীরে ধীরে আপনার ত্বকের পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

ত্বকের জন্য পর্যাপ্ত পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং টানটান ভাব ধরে রাখার জন্য ঘরে বসে যত্নের পাশাপাশি আপনি পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করুন। আপনার ত্বকের জন্য সহায়ক কিছু খাবার এবং পানীয় অভ্যাস নিচে তুলে ধরা হলো:

১. পর্যাপ্ত পানি পান করা:
  • অবশ্যই প্রতিদিন অন্ততপক্ষে আট থেকে দশ ক্লাস পানি পান করুন যা ২.৫ লিটার সমান।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে আপনার ত্বক ভিতর থেকে হাইড্রেট রাখে এবং ডার্ক সার্কেল ব্রোন ও ত্বকের রুক্ষতা অনেকাংশে দূর করে।
  • অবশ্যই সকালে অন্ততপক্ষে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানি যদি পারেন লেবু দিয়ে পান করুন এতে আপনার ত্বক অনেকাংশে পরিষ্কার থাকে।
২. ত্বকের জন্য উপকারী স্বাস্থ্যকর কিছু খাবার
ফলমূল:
  • কমলা, লেবু, আমলকি: উল্লেখিত ফলগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে যা আপনার ত্বকে কোলাজেন তৈরি করতে অনেক সাহায্য করে।
  • পেঁপে, কলা, আপেল: এগুলি আপনার ত্বক উজ্জ্বল করে এবং নরম রাখতে খুবই সহায়ক উপাদান।
সবজি:
  • গাজর, পালং শাক, ব্রোকলি: উক্ত সবজিগুলো অনেকাংশে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন A সমৃদ্ধ যা আপনার ত্বক মসৃণ করে।
বাদাম এবং বীজ:
  • বাদাম, আখরোট, চিয়া সিড: উল্লেখিত খাবার গুলি ওমেগা তিন ফ্যাটি অ্যাসিড যা আপনার ত্বক টানটান ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।
প্রোটিন:
  • ডিম, মাছ, মুগ ডাল, ওটস: উক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো আপনার ত্বক পুনর্গঠন করতে খুবই সহায়ক।
৩. এড়িয়ে চলুন:
  • অবশ্যই আপনি অতিরিক্ত চিনি প্রক্রিয়াজাত খাবার তেল ঝাল খাবার ও সফট ড্রিংকস পরিহার করার চেষ্টা করুন।
  • উক্ত খাবারগুলি আপনার ত্বকে ব্রণ রুক্ষতা এবং অকাল বলিরেখা অনেকাংশে তৈরি করে।

ত্বকের উপর ঘুম ও মানসিক প্রশান্তির প্রভাব

ত্বকের যত্ন নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম এবং মানসিক প্রশান্তি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ঘরে বসেই এই দুই বিষয়ে যদি নজর দেন তবে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং তারুণ্য অনেকাংশেই ধরে রাখতে পারবেন।

১. ত্বকের ওপর ঘুমের প্রভাব
প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।
  • ত্বকের কোষ পুনর্গঠন: রাতে আপনি যখন ঘুমান তখন সেই সময় আপনার ত্বক নতুন কোষ তৈরি করে এবং পুরনো কোষগুলো অনেকাংশে মেরামত বা ঠিক করে।
  • ডার্ক সার্কেল কম: আপনি একটি জিনিস লক্ষ্য করবেন পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম না হলে আপনার চোখের নিচে কালো ও ফোলা ভাব দেখা যায়।
  • ত্বক টান টান: ঘুমের সময় আপনার শরীরে কোলাজেন তৈরি হয় যা আপনার ত্বক টানটান এবং নমনীয়তা অনেকাংশে ধরে রাখে।
স্লিপ হাইজিন টিপস:
  • ঘুমানোর আগে আপনি আপনার মোবাইল এবং স্কিন টাইম কমিয়ে দিন।
  • ভালো ঘুমের জন্য আপনার রুম হালকা আলো এবং ঠান্ডা বাতাসের ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
  • প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা বা অভ্যাস করুন।
২. মানসিক প্রশান্তির প্রভাব
স্ট্রেস চিন্তা ত্বকের যে ক্ষতিগুলো করে:
  • স্ট্রেস বা অধিক চিন্তা বেড়ে গেলে আপনার ত্বক তেল গ্রন্থিকে অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে পড়ে যা ব্রণ সৃষ্টি হয়।
  • আপনি যদি দীর্ঘ মেয়াদে স্ট্রেস বা চিন্তা করেন তবে সেক্ষেত্রে আপনার ত্বকে বলি রেখা এবং রুক্ষতা তৈরি হয়।
মানসিক শান্তি বজায় রাখার কিছু ঘরোয়া উপায়:
  • ধ্যান অথবা মেডিটেশন: প্রতিদিন সকালে দশ মিনিট অন্ততপক্ষে মেডিটেশন করলে আপনার মস্তিষ্ক এবং ত্বক উভয়ই ভালো থাকে।
  • গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস: আপনি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার মাধ্যমে স্ট্রেস কমাতে পারেন।
  • ইচ্ছেমত গান শোনা, বই পড়া নরম আলোয় আরাম: এগুলি আপনার মনকে অনেকাংশে শান্ত রাখে এবং আপনার শরীরের রক্ত সঞ্চালন অনেকাংশে ঠিক রাখে।

লেখক এর শেষ কথা

ত্বকের যত্ন নেওয়া মানে শুধু বাহ্যিকভাবে ফেসপ্যাক বা ক্রিম লাগানো এমনটা নয় সে ক্ষেত্রে এটি একটি সামগ্রিক অভ্যাস এবং যার মধ্যে আপনার সঠিক খাবার নির্বাচন পর্যাপ্ত ঘুম এবং পানি পান করা মানসিক প্রশান্তি এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ ও মাসাজ ছবি অন্তর্ভুক্ত আছে। আপনি ঘরে বসেই সহজ কিছু রুটিন বা নিয়ম-কানুন মেনে চললেই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি এবং পরিবর্তন হতে পারে।

প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া একদিকে যেমন আপনি নিরাপদ বোধ করছেন তেমনি সাশ্রয়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী ফলো অনেকাংশে আপনার জন্য ফলদায়ক হতে পারে। প্রকৃতি থেকে আমরা যেগুলো পায় তার সঠিক ব্যবহার করলেই আমরা কৃত্রিম প্রসাধনের ওপর নির্ভর না করেও নিজেদের সৌন্দর্য রক্ষা করতে অনেক সাহায্য পেতে পারি।

[সর্বোপরি একটা কথা বলা চাই সুন্দর ত্বক সম্ভবত আপনার ধৈর্য পরিচর্যা এবং ইতিবাচক মনোভাব থেকে তৈরি হয় এজন্য আমি বলব আপনি নিজেকে সময় দিন নিজেকে ভালবাসুন তবেই আপনার ত্বকের যত্ন নিশ্চিত হবে।]


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আশিক টেক আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটা কমেন্টে রিভিউ করা হয় নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url